মোসাঃ কল্পনা বেগম বামনপাড়া,বামনহাট,মাড়েয়া,বোদা,পঞ্চগড় এর মেয়ে। তার বিয়ে হয় মাত্র ১৩ (আনুমানিক) বছর বয়সে, বর্তমানে তার বয়স ৩০ এর কোঠায়। তাদের সংসারে দুই বছরের ভিতরে একজন কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। সন্তানের বয়স যখন মাত্র তিন মাস আর অন্যদিকে অভাবের সংসার তখন তার স্বামী তাকে তালাক দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করে চলে যান। রাজ্যের বিপদ যেন এই ১৫ বছরের মেয়ের ঘাড়ে চড়ে বসে। সমাজ তাকে মেনে নেয় না, নিজের পরিবারও তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে । পারিবারিক লাঞ্ছনা ও একটি কন্যা সন্তান থাকায় নতুন কোন বিয়ে করার সুযোগ পর্যন্ত হয়নি। কোন ভিটামাটি নাই, নাই কোন অর্থ সম্পদ তারপরেও এই হার না মানা বোনটি যুদ্ধ করেই চলেছে আজও।
অনেক সময় আর পথ তাকে পাড়ি দিতে হয়েছে বহু কষ্টের জীবন যাপনের মাঝে। তিনি পরের বাসায় কাজ করে, জমিতে কৃষি কাজ, কল কারখানা ইট ভাংগাসহ রাজ মিস্ত্রীর কাজ করে তিনি তার ও তার কন্যা সন্তানের ভরন পোষণের ব্যবস্থা করে আসছেন। বিভিন্ন সময় তাকে অনেকে অর্থ দিয়েও সাহায্য করেছেন। এই অবস্থায় তিনি কখনোই ভিক্ষার জন্য হাত পাতেন নাই। এখনো তিনি কষ্ট করেই চলেছেন।
তার সেই ছোট্ট কন্যা সন্তান শরীফা আক্তার মৌসুমি আজ বড় হয়েছে । মেয়েটার যখন বয়স নয়, মেয়েটাকে দ্বীন শিখানোর জন্য তার মা ভর্তি করে দেন ক্বওমী মহিলা মাদ্রাসায়৷ মেয়েটার বর্তমান বয়স ১৫ এর কাছাকাছি৷ মেয়েটা এখন পঞ্চগড় শহরের "মাদানী নেসাব ১ম" বর্ষে পড়ে৷
ছবিতে দেয়া যে ঘরটি দেখা যাচ্ছে সেই ঘরটি এই বোনটিই নির্মাণ করেছেন বহু কষ্টে। কিন্তু যে অল্প যায়গায় তার ঘরটি নির্মাণ করেছেন সেই জায়গাটি তার নিজের নয়। অন্য এক দয়াবান লোক তাকে ঘর করে তুলে থাকতে দিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই লোক তাকে থাকতে দিতে অপারগ।।
এই অবস্থায় মোসাঃ কল্পনা বেগম বিরাট সমস্যায় পড়ে গেছেন। তিনি ও তার মেয়ে এখন কোথায় গিয়ে থাকবেন তার কোন ব্যবস্থা নাই। না আছে কোন জমি না আছে কোন ঘর। তাই আমরা চাইলে তাকে তার ইউনিয়নেই কোন ছোট জায়গা কিনে ঘর তুলে দিয়ে স্থায়ী বন্দোবস্ত করে দিতে পারি।
বাংলাদেশে মোসাঃ কল্পনা বেগমের মত সংগ্রামী নারী হাজার নয় লক্ষাধিক পাওয়া যাবে। এই প্লাটফর্মটির মাধ্যমে অন্তত একটি নারীকেও যদি আমরা আবাসন ব্যবস্থা গড়ে দিতে পারি ইনশা আল্লাহ আমাদের সৃষ্টিকর্তাও আমাদেরকে জান্নাতে আবাসন গড়ে দিবেন।
পরের জায়গা পরের জমি
ঘর বানাইয়া আমি রই
আমি তো সেই ঘরের মালিক নই